জলাঞ্জলি

নীতি আয়োগের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে, ভারতের ৪০ শতাংশ মানুষ পরিশ্রুত পানীয় জল পাবে না

পৃথিবীতে মোট জলের পরিমাণ প্রায় ১৩, ১০০ লক্ষ ঘন কিলোমিটার। এই জলের প্রায় ৯৭ শতাংশ সমুদ্রের নোনা জল। আর প্রায় তিন শতাংশ বা ৩৯০ লক্ষ ঘন কিলোমিটার জল পৃথিবীতে বরফ, বাষ্প, এবং তরল জল হিসেবে পাওয়া যায়। এই পরিষ্কার জলের প্রায় ৭৫ শতাংশ পৃথিবীর উপরে এবং প্রায় ২৫ শতাংশ পৃথিবীর বিভিন্ন গভীরতায় পাওয়া যায়। ভারতের মাটির ওপরের জলের পরিমাণ অনুমান করা হয়েছে ৪০০০ লক্ষ হেক্টর মিটার এবং ভূজলের পরিমাণ ৩৯৬ লক্ষ হেক্টর মিটার।

তবে এত জল থাকলেও, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ জলের সংকটের কবলে পড়েছে। 'নীতি আয়োগ'-এর মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে, ভারতের ৪০ শতাংশ মানুষ পরিশ্রুত পানীয় জল পাবে না। ভারতে ৭৫ বছর আগে ১৫ হাজার বহতা নদী, ৩০ লক্ষ কুয়ো, পুকুর ও হ্রদ ছিল। এর মধ্যে ৪৫০০টি নদী শুকিয়ে গেছে এবং ২০ লক্ষ কুয়া, পুকুর ও হ্রদ বিলীন হয়ে গেছে।

দেশে প্রতি বছর ১২০ ঘন কিলোমিটার জল ভূগর্ভে যায়। আর তুলে নেওয়া হয় প্রায় ১৯০ ঘন কিলোমিটার। অর্থাৎ বৃষ্টির কারণে মাটির ভেতরে যাওয়া এবং তোলার মধ্যে ৭০ ঘন কিলোমিটারের পার্থক্য রয়েছে। মনে রাখা দরকার, ‘ভূগর্ভস্থ জল পৃথিবীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’। এছাড়া ব্যবস্থাপনার অভাবে, প্রতি বছর প্রায় ৯০ লক্ষ কোটি লিটার বৃষ্টির জল বয়ে চলে যায়। এতে ভূমিক্ষয়ও বাড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে প্রকৃতির দান হিসেবে অবাধে পাওয়া জলকে পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে। ভারতে এখন পানীয় জলের ব্যবসার পরিমাণ ১.৪০ লক্ষ কোটি টাকা, যা আগামী কয়েক বছরে ৪.৫ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছবে। বোতলজাত জলের ব্যবসার মধ্যে একা বিসলেরিই ৪০ শতাংশের বেশি বাজার দখল করে রেখেছে। বোতলজাত জলের বাজার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ভূজল উত্তোলন, ভূমি ব্যবহার, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কার্বন নির্গমন ইত্যাদির ওপর প্রভাব ফেলছে। 

অক্টোবর - ২৩, ২৯-২৫, জল, ব্যবসা

Comments

Popular posts from this blog

লিঙ্গসাম্যের দিকে এগোচ্ছে দেশ

পারম্পরিক জ্ঞানের তথ্যায়ন

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ