জলাভূমি বিপন্ন

গত তিন শতাব্দীতে ৩৪ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জলাভূমি ধ্বংস হয়েছে

মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধিই পরিবেশ ধ্বংসের সবচেয়ে বড় কারণ। ক্রমবর্ধমান চাহিদায়, গত তিন শতাব্দীতে ৩৪ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জলাভূমি ধ্বংস হয়েছে। যার মাপ ভারতের আয়তনের চেয়ে বেশি। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের করা নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে, যা এই ফেব্রুয়ারির নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকদের মতে, ১৭০০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বে প্রায় ২১ শতাংশ জলাভূমি হারিয়ে গেছে। আর ভারতে হারিয়েছে ৭৫ শতাংশ। তবে আশার কথা হল, গবেষকরা বলছেন, কিছু এলাকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখনো বেশিরভাগ জলাভূমি রক্ষা করা সম্ভব।

জলাভূমি সংরক্ষণের উদ্দেশ্য সেগুলিকে রামসার সাইট (বা সংরক্ষিত এলাকা) হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যেমন পূর্ব কলকাতার জলাভূমি হল একটি রামসার সাইট। সারা বিশ্বে এখনো ১২১ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত বিভিন্ন জলাভূলি। তবে তার মাত্র ১৩ থেকে ১৮ শতাংশ এলাকা রামসার সাইটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে হারে জঙ্গল নষ্ট করা হচ্ছে, তাতে এর তিন গুণ দ্রুত হারে জলাভূমিগুলি বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ, মাটির নিচে জল সঞ্চালন, কার্বন আধার, জল পরিষ্কার করা এবং জীববৈচিত্র রক্ষার সহায়ক হলেও, জলাভূমিগুলিকে দীর্ঘদিন ধরে অনুৎপাদনশীল এলাকা হিসাবে দেখা হয়। জীব বৈচিত্রের দিক থেকেও জলাভূমিগুলি গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ প্রজাতি জলাভূমিতে বাস করে অথবা তাদের বংশবৃদ্ধির জন্য জলাভূমিকে ব্যবহার করে। এখন এখানকার ২৫ ভাগেরও বেশি জীব বিলুপ্তির মুখে রয়েছে।

জলাভূমিগুলি জল পরিষ্কার করে, বন্যা প্রতিরোধ করে এবং শহরের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। তাই দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই জলাভূমি বাঁচানোর চেষ্টা করা খুবই জরুরি। আর স্থানীয় মানুষদের বাদ দিয়ে এই ভূমি সংরক্ষণ সম্ভব নয়।

ফেব্রুয়ারি - ২৩, ২৮-৪৭, পরিবেশ, জলাভূমি

Comments

Popular posts from this blog

রক্তচাপ কমায় টম্যাটো

সার থেকে ক্যান্সার

আচ্ছে দিন