জবার জবাব নেই

স্বাস্থ্যরক্ষায় বিশ্ব জুড়ে জবা ফুল থেকে তৈরি চায়ের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে


জবা ফুলে এমনিতেই বেশ কিছু ওষধি গুণ রয়েছে। আর জবা ফুল থেকে তৈরি চা এখন খুবই জনপ্রিয়। জবা ফুল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। আর তাই বিশ্ব জুড়ে জবা ফুল থেকে তৈরি চায়ের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে।

সম্প্রতি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, এই চায়ে উপস্থিত কিছু উপাদান (অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ) নিমেষে রক্তচাপকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যা থেকে রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন, তারা জবা ফুলের চা খেয়ে দেখতে পারেন।

রক্তচাপ বাড়লে এবং খাওয়া দাওয়া নিয়ম মেনে না হলেই রক্তে বাড়ে কোলেস্টেরল। সেখান থেকে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও বাড়ে। জবার চা হার্টে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। কোলেস্টেরলও জমতে দেয় না। এছাড়া মস্তিস্ক ও হার্টের ক্ষতির থেকে বাঁচায়।

জবা ফুলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীর থেকে টক্সিন (বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দেয়। এর ফলে যকৃৎ বা লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ে। ক্যান্সারের আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে সাহায্য করে।

জবা ফুলে রয়েছে প্রচুর অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড আমাদের শরীরে ভিটামিন সি’র চাহিদা মেটায়। আর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সেই কারণে বিভিন্ন সংক্রমণে বিশেষ করে সর্দি-কাশির আর্য়ুবেদিক ওষুধ তৈরিতে জবা ফুল ব্যবহার করা হয়।

মাসিকের সময়ে নিয়মিত জবা ফুলের চা খেলে খিঁচুনি, ব্যথা অনেকটাই কমে। নানারকম অস্বস্তিও দূর হয়। প্রসঙ্গত, এই চা শরীরের হরমোনগুলি ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

জবা ফুলের মধ্যে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ স্নায়ুতন্ত্রকে উজ্জীবিত করে। ফলে নানা কারণে –অকারণে মন খারাপ হলে অথবা মনে আশংকা তৈরি হলে, এই চা খান আর চট করে তরতাজা হয়ে যান।

নিয়মিত জবার চা খেলে শরীরে শর্করা শোষণ কমে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে। এছাড়া এই চা অ্যামাইলেজ নামক উৎসেচকের ক্ষরণ কমিয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।

জবা ফুলের চা তৈরি করতে ফুলের পাঁপড়িগুলি সাবধানে ছিড়ে নিন। এবার মাঝখানের ডাঁটি ফেলে দিন। জলের মধ্যে দারচিনি বা এলাচ ফেলে ফুটিয়ে নিন। দশ মিনিট ফোটানোর পর রং বদলালে ছেঁকে নিন। মধু মিশিয়ে খান। এর সঙ্গে গ্রিন টি ব্যবহার করতে পারলে খুবই ভালো হয়। এছাড়া জবা ফুলের পাঁপড়ি সাতদিন রোদে ফেলে শুকিয়ে তা কাঁচের জারে সংরক্ষণ করেও রাখতে পারেন। তারপর চা তৈরির সময় মিলিয়ে নিতে পারেন। 

অগস্ট - ২২, ২৮-১২, স্বাস্থ্য, জৈববৈচিত্র

Comments

Popular posts from this blog

লিঙ্গসাম্যের দিকে এগোচ্ছে দেশ

পারম্পরিক জ্ঞানের তথ্যায়ন

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ