মাটি মা মানুষ
মাটি আসলে জৈব পদার্থ, খনিজ পদার্থ, গ্যাস, তরল এবং জীবন্ত প্রাণীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জটিল মিথস্ক্রিয় ব্যবস্থায় সৃষ্ট এক সম্পদ
মাটি আসলে জৈব পদার্থ, খনিজ পদার্থ, গ্যাস, তরল এবং জীবন্ত প্রাণীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জটিল মিথস্ক্রিয় ব্যবস্থা। এই জটিল ব্যবস্থা সব জীবের প্রাণের সংরক্ষক। এর মধ্যে থাকা জৈব উপাদান, যেমন হিউমাস এবং অণুজীব, মাটিকে বাস্তুতন্ত্রের একটি প্রাণবন্ত এবং অপরিহার্য উপাদানে রূপান্তরিত করে।
মাটি হল জীবনের ভিত্তি, খাদ্য উৎপাদন, জল পরিশোধন, বন্যা সুরক্ষা, খরা প্রতিরোধ করে এবং প্রয়োজনীয় খনিজ সরবরাহ করে। একই সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে কার্বন গ্রহণ করে জলবায়ু বদল প্রশমিত করতে সাহায্য করে।
সুস্থ মাটি ছাড়া, বেঁচে থাকার মৌলিক উপাদান, খাদ্য উৎপাদনই ব্যাহত হয়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গত ৪৫ থেকে ৬০ বছরে, মাত্র ৮০ থেকে ১০০টি ‘আধুনিক’ ফসলের ওপর নির্ভর হয়ে, আমরা মাটির ব্যবহারকে সীমিত করে দিয়েছি। ফলে বেশিরভাগ মানুষের খাদ্য স্বয়ম্ভরতা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে।
খুব জরুরি কথা হল, জলবায়ু বদল প্রশমিত করতে, স্বাস্থ্যকর মাটি খুবই দরকার। কিন্তু বর্তমান চাষ ব্যবস্থা এবং বনধ্বংসের জন্য মাটির ক্ষয় উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। এখন বিশ্বব্যাপী ৫২ শতাংশ কৃষি জমি ইতিমধ্যেই ক্ষয়ে গেছে।
প্রতি বছর ৫ ডিসেম্বর বিশ্ব মাটি দিবস পালন করা হয়। এবছরও খুব ধুমধাম করে তা পালন হয়েছে। কিন্তু বলেই দেওয়া যায় মাটি অবহেলিত থেকেই যাবে। যদি না আমাদের চলতি চাষ ব্যবস্থা পরিবর্তন না করা যায়।
মনে রাখা দরকার, মাটি এবং জল একসঙ্গে আমাদের খাদ্য সরবরাহের ৯৫ ভাগ সরবরাহ করে। আমাদের কৃষি ব্যবস্থার মেরুদণ্ডই হল মাটি। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সরকারগুলি জৈব এবং টেকসই কৃষির পক্ষে কথা বলছে। রাসায়নিক মুক্ত মাটি, মাটির জৈব পদার্থ সংরক্ষণ, মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখা, ভূজলের ক্ষতি কমানো এবং মাটির ক্ষয় নিয়ন্ত্রণ নিয়েও কাজ চলছে। কিন্তু যে তৎপরতার সঙ্গে এই কাজ করা দরকার তা হচ্ছে না। আমরা কারণের বদলে ফলাফলের চিকিৎসা করছি। তাই এর ক্ষয় রোধ করা ক্রমশ দুরূহ হয়ে পড়ছে।
ডিসেম্বর - ২৩, ২৯-৩৯, মাটি, জৈব সম্পদ
Comments
Post a Comment