চন্দ্রাহত !
সত্যি বুদ্ধিমান মানুষের কী দাপট – নিজের ঘরে আগুন লাগিয়ে চাঁদে, মঙ্গলে বাসা খুঁজে বেড়াচ্ছে… লিখছেন সুব্রত কুণ্ডু
হাইড্রোজেন আর অক্সিজেন মিলে জল। আলাদা আলাদা থাকলে হাইড্রোজেন দাহ্য। প্রচুর তাপ উৎপাদনকারী। সূর্যের ৫৫ শতাংশ গ্যাস হল হাইড্রোজেন। আর অক্সিজেন মানুষসহ প্রাণীকূলের বেঁচে থাকার আধার। তাই জলের খোঁজ ! ভবিষ্যতের কথা ভেবে ! কারণ পৃথিবীর অবস্থা খুব ভাল নয়।
চাঁদ কেন, অজানা সব কিছু নিয়ে বিজ্ঞানচর্চা, গবেষণা চলুক। চাঁদে, মঙ্গলে মানুষ পাড়ি দিক। কিন্তু নিজেদের গ্রহের ফলিত সমস্যাগুলি নিয়ে আমরা কী করছি। বিজ্ঞান, গবেষণা বলছে, মানুষের অপরিসীম লোভে সমগ্র প্রাণীকূল বিপন্ন হয়ে পড়ছে। গত ১০০ বছরে আমরা প্রকৃতিকে এতটাই দূষিত করেছি যে, আমাদের বেঁচে থাকাই দুষ্কর হয়ে পড়ছে। তবুও টনক নড়ছে না। অত্যাধিক কার্বন নির্গমনকারী ইন্ধন (জীবাশ্ম জ্বালানি) আর প্রযুক্তির ব্যবহার; লোভের জন্য বেঁচে থাকার আধার প্রকৃতির শোষণ; দেশে দেশে যুদ্ধ বাধিয়ে আমরা বেশিরভাগ মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করছি। তবে যারা এসবে মূল হোতা— যারা লাভ ও লোভের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির মাধ্যমে সীমাহীন ধন সম্পদ তৈরি করছে— তারা জানে এই বিপদের কথা। মহাপ্রলয়ে টিকে থাকার জন্য কোন মেরুতে, কোন দেশে বা কোন গ্রহে যাবে, তার পরিকল্পনা ছকে ফেলেছে তারা। কেউ কেউ তো বাঙ্কারও বানিয়ে ফেলেছে বলে শোনা যাচ্ছে (ডগলাস রাশকফের ‘সারভাইভাল অব দ্য রিচেস্ট’ বইতে যার উল্লেখ রয়েছে)।
কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ কী করবে! তারা কোথায় যাবে! উপায় কী বেঁচে থাকার। একমাত্র উপায় লাভ ও লোভের অর্থনীতি, সংস্কৃতির বিরুদ্ধে জেহাদ। আর এটা যদি আমরা না করতে পারি তবে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ‘ডোন্ট চুজ এক্সটিঙ্কশন’ অ্যানিমেশন ছবিতে রাষ্ট্রসংঘের এক অধিবেশনে সবাইকে চমকে দিয়ে এক ডাইনোসর, পোডিয়ামে গিয়ে তাচ্ছিল্য করে বলছে, আমরা বিলুপ্ত হয়েছিলাম বহিরাগত গ্রহাণুর আঘাতে। আর তোমরা কিনা নিজেরাই, নিজেদের অবলুপ্তির জন্য জীবাশ্ম পুড়িয়ে, পৃথিবীকে গরম করে তুলতে, কোটি কোটি টাকা ভরতুকি দিচ্ছ ! অদ্ভুত ! ৭ কোটি বছরে এমন বোকামো দেখা যায়নি। শোনো অবলুপ্তি খুব খারাপ। আর তোমরা তোমাদের নিজেদেরই কবর খুঁড়ছ…। সত্যি বুদ্ধিমান মানুষের কী দাপট – নিজের ঘরে আগুন লাগিয়ে চাঁদে, মঙ্গলে বাসা খুঁজে বেড়াচ্ছে…
নভেম্বর - ২৩, ২৯-৩২, জলবায়ু বদল
Comments
Post a Comment