সহায়ক মূল্য আর খাদ্য নিরাপত্তার পদক্ষেপ

সহায়ক মূল্য দিতে এবং খাদ্য নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী খাদ্য পৌঁছে দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ


উৎপাদিত ফসল সংগ্রহ ও তার জন্য সহায়ক মূল্য দিতে এবং খাদ্য নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী খাদ্য পৌঁছে দিতে কেন্দ্রীয় সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা হল—
  • ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে খাদ্যশস্য সংগ্রহের সরকারি নীতি তৈরি হয়েছে। সেই নীতি অনুসারে নির্দিষ্ট মান ও শ্রেণী অনুযায়ী সরকারি সংস্থাগুলি শস্য কিনে থাকে।
  • বীজ বোনার আগেই ন্যুনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করা হচ্ছে, যাতে চাষিরা কোন শস্য চাষ করবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
  • সরকার প্রতি বছর খাদ্য শস্যের ন্যুনতম সহায়ক মূল্য বাড়াচ্ছে, যাতে কৃষি উৎপাদন চাষিদের কাছে লাভজনক হয়।
  • আগে থেকেই ফসলে মান ও শ্রেণী এবং বিক্রিসহ, এরসঙ্গে সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে চাষিদের জানান হচ্ছে। এর ফলে তারা নির্দিষ্ট মান অনুসারে তাদের ফসল উৎপাদন করতে পারছে। আর বাজারে গুণমান সম্পন্ন ফসল বিক্রির জন্য আনতে পারছে।
  • ফসল সংগ্রহের জন্য ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এফসিআই)সহ সংগ্রহকারী সংস্থাগুলি যথেষ্ঠ সংখ্যক সংগ্রহ কেন্দ্র খোলে। এছাড়া চলতি মান্ডি এবং ডিপো/গোডাউনের পাশাপাশি বহু সাময়িক ক্রয় কেন্দ্রও খোলা হয় চাষিদের জন্য।
  • ২০২১-২২ রবি বিপণন মরশুম থেকে সারা দেশে ‘ওয়ান নেশন ওয়ান এমএসপি থ্রু ডিবিটি’ বা এক দেশ এক সহায়ক মূল্য এবং দাম সরাসরি চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানোর ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এতে চাষিদের অ্যাকাউন্টে টাকা সরাসরি পৌঁছানো নিশ্চিত করা হয়েছে। এর ফলে ভুয়ো চাষিরা বাদ গেছে। অর্থের অপচয় কমেছে।
  • এফসিআই এবং বেশিরভাগ রাজ্য সরকার তাদের নিজস্ব অনলাইন সংগ্রহ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। এর ফলে চাষি এবং ফসলের নথিকরণ এবং প্রকৃত সংগ্রহ, স্বচ্ছতা সঙ্গে হচ্ছে।
  • ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিতরণের জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে খাদ্যশস্য দিয়ে থাকে। ভারত সরকার দেশের জনগণকে খাদ্য নিরাপত্তা দিতে বরাদ্দ স্থির করে থাকে।
  • সরকার জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইন ২০১৩ রূপায়ণ করছে। এই আইনের আওতায় গ্রামীণ জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত এবং শহরের জনসংখ্যা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত খাদ্যশস্য পাচ্ছে বিনামূল্যে। এতে ২০১১-এর জনগণনা অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যার তিন ভাগের দুই ভাগ বা ৮১.৩৫ কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় চলে এসেছে। আইনটি রূপায়িত হচ্ছে সবকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। উল্লেখ করা ৮১.৩৫ কোটির মধ্যে ৮০.১১ কোটি মানুষ বর্তমানে খাদ্য পাচ্ছে।
এসব সরকারি ভাষ্য। আমরা জানি সরকারের কথার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষজনের অভিজ্ঞতার বিস্তর ফারাক। যেমন সরকার বলছে, প্রতি বছর সহায়ক মূল্য বাড়ানো হয়। এটা ঠিক, তবে এর ফলে চাষিদের সত্যি অর্থে আয় বাড়ে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। অন্যদিকে খাদ্য নিরাপত্তা মানে কি শুধুই কার্বোহাইড্রেড-এর নিরাপত্তা? নাকি এর সঙ্গে প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিনসহ অন্য খাদ্যেরও নিরাপত্তা ! এসব প্রশ্নের উত্তর সরকারের কাছে নেই।

এপ্রিল - ২৩, ২৮-৫৭, কৃষি, অর্থনীতি

Comments

Popular posts from this blog

লিঙ্গসাম্যের দিকে এগোচ্ছে দেশ

পারম্পরিক জ্ঞানের তথ্যায়ন

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ