লাখপতি হবে মহিলারা !

মহিলাদের উপার্জন আরো বাড়াতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের উদ্যোগ


আর্থিক স্বচ্ছলতা আরো বাড়ানোর ওপর বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের লাখপতি করে তুলতে একটি অভিনব উদ্যোগের সূচনা করেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রামীণ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা বার্ষিক অন্তত ১ লক্ষ টাকা উপার্জনে সক্ষম হয়ে উঠবে বলে সরকার মনে করছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের লাখপতি করে তোলার উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্য পূরণে মন্ত্রক আগামী ২ বছরে ২ কোটি ৫০ লক্ষ গ্রামীণ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাকে জীবন জীবিকায় সাহায্যের পরিকল্পনা করেছে। দেশে বর্তমানে চালু বিভিন্ন মডেলের ওপর ভিত্তি করে রাজ্য সরকারগুলিকে একটি বিস্তারিত পরামর্শ জারি করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে রাজ্যগুলির সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনার জন্য ২৮ অক্টোবর একটি কর্মশিবির আয়োজন করা হয়।

রাজ্যগুলির সঙ্গে এই কর্ম শিবিরে আলাপ-আলোচনার ওপর ভিত্তি করে পারিবারিক স্তরে জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে আরও বৈচিত্র আনার বিষয়ে সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হয়। রাজ্যগুলিকে বলা হয়, দীর্ঘস্থায়ী ভিত্তিতে বার্ষিক ১ লক্ষ টাকা উপার্জনের লক্ষ্যে কৃষি ও সহযোগী ক্ষেত্র, গবাদিপশু পালন, বনজ সামগ্রীর বিপণনে আরো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে আরো শক্তিশালী করে তুলতে গ্রামাঞ্চলে ক্লাস্টার লেভেল ফেডারেশন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। স্থির হয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নির্দিষ্ট কয়েকজন মহিলা সদস্যকে উপার্জনে বৈচিত্র আনতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে নাগরিক সমাজ, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র এবং অন্যান্য বেসরকারি সংস্থাগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকছে। রাজ্যগুলিকে বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে তাদের উৎসাহ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

জাতীয় গ্রামীণ জীবন-জীবিকা মিশন সারা দেশজুড়ে রূপায়িত হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এই কর্মসূচির আওতায় ৬ হাজার ৭৬৮টি ব্লককে নিয়ে আসা হয়েছে। এর ফলে, ৭০ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রায় ৭ কোটি ৭০ লক্ষ মহিলা সদস্য কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে বার্ষিক প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকার মূলধন সহায়তা দেওয়া হয়। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা দরিদ্র মহিলাদের আর্থিক সহায়তা ও আর্থ-সামাজিক পরিষেবা দিয়ে তাদের জীবন-যাপনের মানোন্নয়নে সাহায্য করে থাকে। এর ফলে, দরিদ্র মহিলাদের উপার্জন সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি বিগত বছরে ব্যাঙ্কের কাছ থেকে মূলধনি সহায়তা পেয়ে আসছে। এই সহায়তা এখন জীবন জীবিকায় বৈচিত্র আনার ক্ষেত্রেও সদ্ব্যবহার করা হচ্ছে। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই ধরনের প্রয়াস গ্রহণের উদ্দেশ্যই হল, মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের মর্যাদার সঙ্গে জীবন-যাপন ও স্থায়ীভাবে উপার্জনের পথ সুনিশ্চিত করা। এর ফলে তারা বার্ষিক, অন্ততপক্ষে ১ লক্ষ টাকা উপার্জন করে লাখপতি হয়ে উঠতে পারবেন।

গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র মহিলাদের সক্ষমতা বাড়াতে এবং জীবন-জীবিকায় আরো বৈচিত্র আনতে দীনদয়াল অন্তোদয় যোজনা নামে একটি ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে চাষি হিসেবে মহিলাদের ভূমিকা আরো বাড়াতে মহিলা কিষান স্বশক্তিকরণ পরিযোজনা গ্রহণ করা হয়েছে। এখন চাষিদের উৎপাদক সংস্থাগুলির মাধ্যমে মহিলাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা আরো বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

নভেম্বর -২১, ২৭- ৩৬, স্বনির্ভর দল, উৎপাদন, বিপণন

Comments

Popular posts from this blog

লিঙ্গসাম্যের দিকে এগোচ্ছে দেশ

পারম্পরিক জ্ঞানের তথ্যায়ন

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ