দাতা কর্ণ ওয়ালমার্ট


ওয়ালমার্ট ফাউন্ডেশন তাদের কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর বা সামাজিক দায়) কর্মসূচির জন্য ডিজিটাল গ্রিন এবং টেকনো সার্ভ নামে দুটি সংস্থাকে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা অনুদান দেবে ছোট চাষিদের কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে সহায়তা, সুস্থায়ী চাষে প্রশিক্ষণ, বাজারে অংশগ্রহণ এবং ফার্মার প্রডিউসার্স অরগানাইজেশন (এফপিও) গুলির দক্ষতা সক্ষমতা বিকাশে এই অর্থ ব্যবহার হবে একাজে ভবিষ্যতে তারা আরো অর্থ দেবে বলে ওয়ালমার্টের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ওয়ালমার্টের  মতে, এই অনুদানে অন্ধ্র প্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং উত্তর প্রদেশের ২৯ হাজার মহিলা চাষিসহ  ৮১ হাজারেরও বেশি চাষি উপকৃত হবে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা তাদের দোকানগুলির জন্য ছোট চাষিদের থেকে মোট চাহিদার ২৫ শতাংশ সামগ্রী কিনে নেবে এতে দেশ হিসেবে ভারতের এবং দেশের চাষিদের প্রভূত উন্নতি হবে। ব্যাপারটা এমন যেন মুনাফা ছেড়ে, ভারত এবং তার চাষিদের জন্য ওয়ালমার্ট নিবেদিত-প্রাণ হয়ে গেছে। 

উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, আমাদের দেশে কৃষি সামগ্রীর ব্যবসা মূলত ছোট ব্যবসায়ীরাই করে থাকে কিন্তু ২০০৬ সালে স্বাক্ষরিত ইন্দো-ইউএস কৃষি জ্ঞান চুক্তি অনুযায়ী, এখন দেশের কৃষিকে বড় বড় কর্পোরেটের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক নির্দেশিত ফার্মার প্রডিউসার্স অরগানাইজেশন তৈরির কাজ এসব নিয়েই কর্পোরেটগুলির লক্ষ্য হল,  চাষিগোষ্ঠীগুলিকে নিজেদের মতো পরিচালনা করা এবং একসঙ্গে ফসল কিনে নিয়ে নিজেদের মুনাফা বাড়ানো। প্রাথমিকভাবে চাষি এতে হয়তো লাভবান হবে। কর্পোরেট প্রথমে অনেক লাভ (পড়ুন লোভ) দেখিয়ে বিকল্প ব্যবস্থাগুলি ভেঙে দেবে। ফলে কৃষি সামগ্রী বিক্রির অন্যান্য সুযোগগুলি বন্ধ হয়ে যাবে। আর একটা সময়ের পর, উৎপাদকদের কর্পোরেটদের কাছে তাদের উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। তখন একপ্রকার বাঁধা শ্রমিকের মতো হয়ে যাবে চাষিরা। কালে কালে এমনটাই ঘটছে সর্বত্র। সুতরাং সাধু সাবধান!

সুব্রত কুণ্ডু
(মতামত নিজস্ব)


সেপ্টে-অক্টো ১৯২৫২৯, কৃষি, অর্থনীতি

Comments

Popular posts from this blog

লিঙ্গসাম্যের দিকে এগোচ্ছে দেশ

পারম্পরিক জ্ঞানের তথ্যায়ন

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ