সবুজ শক্তি হাইড্রোজেন!

গ্রিন হাইড্রোজেন এবং এর উপজাত দ্রব্যগুলির উৎপাদন, ব্যবহার ও তার রফতানির কেন্দ্র হিসেবে ভারতকে গড়ে তুলতে চায় সরকার


চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা জাতীয় গ্রিন হাইড্রোজেন মিশনের অনুমোদন দেয়। এজন্য ১৯,৭৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই মিশন রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক। মিশনের প্রধান উদ্দেশ্য হল, ভারতকে গ্রিন হাইড্রোজেন এবং এর উপজাত দ্রব্যগুলির উৎপাদন, ব্যবহার ও তার রফতানির কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।

দেশে গ্রিন হাইড্রোজেন ব্যবহারের বর্তমান অবস্থা-

  • গেইল লিমিটেড শহরাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ গ্রিডে হাইড্রোজেনকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রথম প্রকল্প শুরু করেছে। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের অবন্তিকা গ্যাস লিমিটেডের সিটি গ্যাস স্টেশনের সিএনজি নেটওয়ার্কে ২ শতাংশ এবং পিএনজি নেটওয়ার্কে ৫ শতাংশ হাইড্রোজেন মিশ্রিত করা হচ্ছে।
  • এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে সুরাটে এনটিপিসি কাওয়াস টাউনশিপের পিএনজি নেটওয়ার্কে ৮ শতাংশ পর্যন্ত গ্রিন হাইড্রোজেন মিশ্রিত করা হচ্ছে।
  • এছাড়া, অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাতেও এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলছে। সেগুলি হল
  • লেহ-তে এনটিপিসি হাইড্রোজেন-ভিত্তিক বাস প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
  • গ্রেটার নয়ডায় এনটিপিসি হাইড্রোজেন-ভিত্তিক ফুয়েল সেল ইলেক্ট্রিক ভেহিকেল বাস তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
  • অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড ৬০ কিলোওয়াট ক্ষমতার হাইড্রোজেন এবং চলতি জ্বালানির হাইব্রিড মডেলের বাস তৈরি করেছে।
  • ইন্ডিয়ান অয়েল সৌরশক্তি ব্যবহার করে ইলেক্ট্রোলাইসিসের মাধ্যমে গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য বায়োমাস অক্সি স্টিম গ্যাসিফিকেশন ও সিবিজি রিফর্মিং-এর একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যেখানে ১৫টি হাইড্রোজেন জ্বালানি ভরে বাস চালানো হচ্ছে।
  • এছাড়া, বিভিন্ন সংস্থা ভারতে গ্রিন হাইড্রোজেন/গ্রিন অ্যামোনিয়া উৎপাদনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
তবুও বলা যায়, গ্রিন হাইড্রোজেনের ব্যবহার দেশে এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরীক্ষামূলক প্রকল্পগুলির কাজ চলছে। সেজন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, তেলের ওপর নির্ভরতা কমানো এবং রফতানি বাড়ানোর ক্ষেত্রে এর প্রভাব এখনও ততটা বোঝা যাচ্ছে না। তবে, ২০৩০ সালের মধ্যে জাতীয় গ্রিন হাইড্রোজেন মিশনের যে সুফল পাওয়া যাবে তা হল-
  • ভারতের গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদন ক্ষমতা বার্ষিক ৫০ লক্ষ মেট্রিক টনে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে জৈব জ্বালানির ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমবে। মিশনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা গেলে, ২০৩০ সালের মধ্যে জৈব জ্বালানি আমদানির খরচে সব মিলিয়ে মোট ১ লক্ষ কোটি টাকার সাশ্রয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
  • এর ফলে ৮ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে এবং ৬ লক্ষেরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
  • জাতীয় গ্রিন হাইড্রোজেন মিশনে গ্রিন হাইড্রোজেন ট্রানজিশন প্রকল্পে ভারতে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টন গ্রিন হাইড্রোজেন উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
লোকসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে কেন্দ্রীয় নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রকের তরফে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জানুয়ারি - ২৪, ২৯-৪৬, শক্তি, পরিবেশ

 

Comments

Popular posts from this blog

লিঙ্গসাম্যের দিকে এগোচ্ছে দেশ

পারম্পরিক জ্ঞানের তথ্যায়ন

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ