উদ্ভিদে বন ও বাঘের ক্ষতি

দ্রুত ছড়িয়ে পড়া উদ্ভিদের কারণে, স্থানীয় উদ্ভিদগুলির পরিমাণ কমে যাচ্ছে বা একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছে

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দ্রুত ছড়িয়ে পড়া কিছু উদ্ভিদের কারণে ভারতের অর্ধেকেরও বেশি প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। জার্নাল অফ অ্যাপ্লায়েড ইকোলজিতে প্রকাশিত এই গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের প্রায় ৬৬ শতাংশ এই দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আক্রমণাত্মক প্রজাতিগুলির জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, দেশের ২০টি রাজ্যের ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার বনভূমির প্রায় এক লক্ষ ৫৮ হাজার প্লটে ১১ টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়া উদ্ভিদ প্রচুর সংখ্যায় বেড়ে উঠেছে। ফলে ওই সব বনের সাধারণ যে উদ্ভিদ, তার সংখ্যা কমে আসছে। এই ১১ টি উদ্ভিদের মধ্যে অন্যতম তিনটি হল, ল্যান্টানা ক্যামারা (পুটুস বা চোতরা), প্রসোপিস জুলিফ্লোরা (বিলিতি বাবুল)এবং ক্রোমোলেনা ওডোরাটা (বন মটমটিয়া)।

এই গবেষণার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ৫১ শতাংশ শুষ্ক পর্ণমোচী বন, ৪০ শতাংশ আর্দ্র পর্ণমোচী বন, ২৯ শতাংশ আংশিক সবুজ বন, ৪৪ শতাংশ চিরহরিৎ বন, ৩৩ শতাংশ ট্রপিক্যাল বা আর্দ্র অঞ্চলের ঘাসের বন এবং ৩১ শতাংশ সাভানা ঘাসের বন থেকে।

এ প্রসঙ্গে ভারতের বন্যপ্রাণী ইনস্টিটিউটের (ডব্লিউআইআই) এবং এই প্রতিবেদনের সহ-লেখক কমর কুরেশি বলেন, ‘বাঘ জাতীয় বন্য প্রাণীর বেঁচে থাকা নির্ভর করে সেই সব প্রাণীর উপর, যারা মূলত তৃণভোজী বা ঘাসপাতা খেয়ে বেঁচে থাকে। কিন্তু দ্রুত ছড়িয়ে পড়া উদ্ভিদের কারণে, স্থানীয় উদ্ভিদগুলির পরিমাণ কমে যাচ্ছে বা একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এতে তৃণভোজীদের খাবার কমছে। তারা কখনো এই দ্রুত ছড়িয়ে পড়া উদ্ভিদ খেয়ে ফেললে তাদের শরীরে নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। এসব কারণে তৃণভোজী প্রাণীদের সংখ্যাও কমছে। ফলে বাঘ জাতীয় মাংসাশী প্রাণীদের খাবারেও টান পড়ছে’। কুরেশি আরো বলেন, ‘দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আক্রমণাত্মক উদ্ভিদের বিস্তার, এই সূক্ষ্ম বাস্তুতন্ত্রগুলিকে বিপন্ন করে তোলে। এর ফলে সামগ্রিক বাস্তুতন্ত্রের উপরও সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ে’।

অক্টোবর - ২৩, ২৯-২৬, জঙ্গল, জীব বৈচিত্র

Comments

Popular posts from this blog

লিঙ্গসাম্যের দিকে এগোচ্ছে দেশ

পারম্পরিক জ্ঞানের তথ্যায়ন

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ