হাতি ও মানুষে সংঘাত বাড়ছে
২০০১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আসামে ১৩৩০টি হাতি মারা গেছে
শুধু কর্নাটকে যে মানুষ ও প্রাণীর মধ্যে সংঘাত দেখা যাচ্ছে তা নয়। দেশের অন্যান্য রাজ্য যেমন ঝাড়খণ্ড, আসাম, ছত্তিশগড়, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে এই সংঘাত দ্রুত বেড়েছে। শুধুমাত্র ঝাড়খণ্ডেই, ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত, পাঁচ বছরে হাতির আক্রমণে ৪৬২ জন মারা গেছে। এই পরিসংখ্যান কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের।
হাতিদের ক্রোধের কারণ খুঁজে বের করার জন্য গত তিন-চার দশকে অনেক সমীক্ষা, গবেষণা করা হয়েছে। এর প্রায় প্রতিটিতেই বলা হয়েছে যে, মানুষের কার্যকলাপ হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থল এবং তাদের পারম্পরিক যাতায়াতের পথে নানারকম সমস্যা তৈরি করেছে।
২০১৭ সালে প্রকাশিত ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ার (ডব্লিউটিআই) রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ছত্তিশগড়ের ২১ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা হাতির আবাসস্থল। মানব-হাতি সংঘর্ষে দেশে যত মানুষ নিহত হয়েছেন, তার মধ্যে ৪৫ শতাংশই এই অঞ্চলের।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ঝাড়খণ্ডে দেশের বন্য হাতি জনসংখ্যার ১১ শতাংশের বাস। এখানে হাতির সংখ্যা ক্রমাগত কমছে, যা বেশ উদ্বেগের বিষয়। রাজ্যে ২০১৭ সালে শেষবার হাতি শুমারি করা হয়েছিল। এই শুমারিতে হাতির সংখ্যা ছিল ৫৫৫। কিন্তু তার পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১২ সালে এখানে জাতির সংখ্যা ছিল ৬৮৮।
এই সমস্যা সমাধানে পরিবেশবিদরা মনে করেন, এক বন থেকে অন্য বনে হাতিদের নিরাপদে চলাচলের জন্য করিডোর তৈরি করা উচিত। করিডোর এমন হওয়া উচিত যেখানে মানুষের প্রায় কোনো ক্রিয়াকলাপ রাখা যাবে না যেসবের জন্য হাতির অসুবিধা হয়। বর্তমানে দেশের ২২টি রাজ্যে নতুন ২৭টি হাতির যাতায়াতের পথ বা করিডোর নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
অন্যদিকে, আসামে সাম্প্রতিক অতীতে মানব-হাতি সংঘর্ষের সংখ্যা খুবই বেড়েছে। আসামের বন মন্ত্রকের মতে, রাজ্যে মানব-হাতি সংঘর্ষের ঘটনা বছরে গড়ে ৭০টিরও বেশি হয়েছে। এতে প্রায় মারা গেছে ৮০টি হাতি। আসামে ৫৭০০টিরও বেশি হাতি রয়েছে। রেকর্ড অনুসারে, ২০০১ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে সেখানে ১৩৩০টি হাতি মারা গেছে।
মে - ২৩, ২৮-৬৯, বন, বন্যপ্রাণী
Comments
Post a Comment