জিন ফসলঃ সরষের পর আবার বেগুন

জিন ফসলের কি সত্যি উৎপাদন বেশি হয়


মহারাষ্ট্রের এক বীজ কোম্পানি বীজো শীতল সীডস প্রাইভেট লিমিটেড, জনক এবং বিএসএস ৭৯৩ নামে প্রথম-ফিলিয়াল প্রজন্মের হাইব্রিড বেগুনের জাত তৈরি করেছে। এই বিটি অর্থাৎ জিন পরিবর্তিত জাতগুলি ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আইএআরআই) মাধ্যমে উন্নত ট্রান্সজেনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। বীজো শীতল সংস্থাটি কর্ণাটকের বাগালকোট ইউনিভার্সিটি অফ হর্টিকালচার সায়েন্সেসকে এই বীজ পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করেছে। সংস্থাটি মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, পাঞ্জাব, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে এই বীজের পরীক্ষা করার অনুমতি চেয়েছে। ডাউন টু আর্থ সুত্রে এ খবর জানা গেছে।

উল্লেখ্য, জিন পরিবর্তিত বা জিএম সরষে কেন্দ্রের পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ২০১১ সালে বিটি বেগুনের ওপর একটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতাদেশ আরোপ করে। আশঙ্কা হল, এই সূত্রে এবার আরো অনেক কোম্পানি নানারকম জিএম ফসলের পরীক্ষা-নিরিক্ষা এবং চাষের জন্য অনুমোদন চাইবে।

কোম্পানিটির মতে, ফল ও কান্ডছিদ্রকারী পোকার উপদ্রবে বেগুনের ফলন অনেক কমে। কিন্তু বিটি বেগুনের চাষ করলে এই পোকার আক্রমণ ৯৭ শতাংশ গাছে হবে না। কারণ বিটি বা ব্যাসিলাস থুরিঞ্জিয়েন্সিস (বিটি) নামের ব্যাক্টেরিয়ার বিষ নির্গতকারী জিন এই বেগুনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে পোকা আর বেগুন নষ্ট করতে পারবে না। এজন্য কীটনাশকের ব্যবহারও কমে যাবে।

মনে রাখা দরকার, একই কথা বলা হয়েছিল বিটি তুলোর ক্ষেত্রেও। কিন্তু দেখা গেছে তুলোর পোকা কমেনি। উল্টে বীজের দাম এবং চাষের খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয়ত, এই বীজ রেখে চাষ করা যায় না, ফলে বছর বছর বেশি দাম দিয়ে বীজ কিনতে হচ্ছে। এছাড়া পরিবেশে এবং মানবদেহে এর প্রভাব সম্পর্কে কোনো সমীক্ষা হয়নি। বিভিন্ন দেশের পরীক্ষা-নিরিক্ষায় বারবার এই বীজের ক্ষতিকর দিকগুলি প্রমাণিত হয়েছে। ফলে ইওরোপের প্রায় সব দেশে জিন ফসল চাষ বন্ধ করা হয়েছে।

জানুয়ারি - ২৩, ২৮-৩৯, চাষ, জিএম ফসল

Comments

Popular posts from this blog

লিঙ্গসাম্যের দিকে এগোচ্ছে দেশ

পারম্পরিক জ্ঞানের তথ্যায়ন

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ