শ্রেষ্ঠ শিক্ষা
ফিনল্যান্ডের ছোট বাচ্চারা স্কুলেই যায় না। অথচ যেকোনো দেশের তুলনায় তাদের ছকভাঙা শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো
ফিনল্যান্ডের মানুষ মনে করে, সাত বছরের আগে শিশুদের মাথায় লেখাপড়া নিয়ে চাপ দেওয়া উচিত নয়। এদেশে সাত বছরের কমবয়সি শিশুদের খেলাধুলোর মাধ্যমে তাদের সৃজনশীল সত্তার বিকাশ ঘটানো হয়। সমবয়সিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব, সকলে মিলেমিশে থাকা, এক সঙ্গে কোনো গঠনমূলক কাজ করা— এ সবই হয় ছোটদের নার্সারি স্কুলে।
ফিনল্যান্ডে পড়ুয়াদের জন্য স্কুল কেবল ন’বছর বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ, সাত বছর বয়সে স্কুলে ঢুকে ১৬ বছরেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাট চুকিয়ে দেওয়া যায়। ইচ্ছা করলে অবশ্য ১৬ বছর বয়সের পরও পড়ুয়ারা স্কুলে বা কলেজে উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারে। তবে সবটাই ঐচ্ছিক।
এ দেশে কোথাও কোনো স্কুলে প্রথম ছ’বছর পরীক্ষা হয় না। শিশুদের মধ্যে কোনো প্রতিযোগিতার মনোভাবকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। ১৬ বছর বয়সে সকলকে ন্যাশনাল ম্যাট্রিকুলেশন এক্সামিনেশন নামে এক পরীক্ষায় বসতে হয়। ফিনিশীয়রা মনে করেন, প্রতিযোগিতা নয়, সহযোগিতাই সাফল্যের চাবিকাঠি। এ দেশে বেসরকারি স্কুলের কোনো অস্তিত্বই নেই।
সংবাদ মাধ্যমের তথ্য বলছে, পৃথিবীর সমস্ত স্কুলের পড়ুয়াদের চেয়ে কম সময় ক্লাস করে ফিনল্যান্ডের পড়ুয়ারা। তবু তাদের শিক্ষাগত পারদর্শিতা অনেক বেশি। এখানকার স্কুলগুলিতে মাত্র পাঁচ থেকে ছ’ঘণ্টা ক্লাস হয়।
ফিনিশীয় শিক্ষকরা পৃথিবীর যোগ্যতম এবং দক্ষতম শিক্ষকদের মধ্যে প্রথম সারিতে। স্কুলে টানা ছ’বছর ধরে পড়ুয়ারা একই শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে থাকে। শিক্ষক বদল হয় না। এতে শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় হয়। একে ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম স্তম্ভ মনে করা হয়। স্কুলে পড়ুয়াদের বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হয়। দুপুরে স্কুলেই তারা পেট পুরে খাওয়াদাওয়া করে।
স্কুলে প্রথমেই বাচ্চারা ফিনিশ ভাষা শেখে। তারপর শেখানো হয় সুইডিশ।এবং তৃতীয় ভাষা হিসাবে বাচ্চারা ১১ বছর বয়স থেকে ইংরেজি শিখতে শুরু করে। স্কুল শেষের পরীক্ষায় ইংরেজি থাকেই না। প্রথম দুই ভাষার পরীক্ষা হয়। এখানকার ৯৩ শতাংশ পড়ুয়া প্রতি বছর হাই স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে বেরোয়। এদেশে নিরক্ষর কেউ নেই বললেই চলে। ইউনেস্কোর রিপোর্ট থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
অক্টোবর - ২২, ২৮-২১, শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রথামুক্ত শিক্ষা
Comments
Post a Comment