বৈষম্যের অমৃতকাল
তথাকথিত 'অমৃতকালের' আসল ছবিটা একদম অন্যরকম
এবছরের বাজেটে বলা হয়েছে আমরা অমৃতকালে প্রবেশ করেছি। ভাবখানা এমন যেন প্রতিটি ভারতবাসী এখন সুখে-স্বচ্ছন্দে দিন কাটাচ্ছে। কিন্তু আসল ছবিটা একদম অন্য। সম্প্রতি ইনইকুয়ালিটি কিলস নামে একটি সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছ বিশ্বের অন্যতম প্রধান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অক্সফ্যাম। সেই রিপোর্ট একটু ঘাঁটলেই বোঝা যাবে এটা অমৃত না বিষকাল। ২০২১ সালের হিসেব অনুযায়ী এই রিপোর্টে বলা হয়েছে
· দেশের ৮৪ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে আর বিলিওনেয়ার (প্রায় ৮হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক)-এর সংখ্যা ১০২ থেকে ১৪২ হয়েছে।
· ২০২১ সালে, ভারতের ১০০ জন ধনী ব্যক্তির সম্মিলিত সম্পদ ছিল - ৫৭.৩ লক্ষ কোটি টাকা – যা একটা রেকর্ড।
· ওই একই বছরে, জনসংখ্যার নীচের দিকে থাকা ৫০ শতাংশ মানুষ জাতীয় সম্পদের মাত্র ৬ শতাংশ ভোগ করেছিল।
· অতিমারির সময়ে (২০২০ সালের মার্চ থেকে ৩০ নভেম্বর ২০২১ পর্যন্ত), ভারতীয় ধনকুবেরদের সম্পদ ২৩.১৪ লক্ষ কোটি (৩১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) থেকে বেড়ে ৫৩.১৬ লক্ষ কোটি টাকা (৭১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) হয়েছে।
· এই সময়ে ৪.৬ কোটিরও বেশি ভারতীয় চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছে। রাষ্ট্রসংঘ বলেছে এই সময়ে সারা বিশ্বে যতজন নতুন করে দরিদ্র হয়েছে তার অর্ধেক হয়েছে ভারতে।
· চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরেই বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক বিলিয়নেয়ার রয়েছে ভারতে। ২০২১ সালে ভারতে বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা ৩৯ শতাংশ বেড়েছে।
· সবচেয়ে ধনী ১০০টি পরিবারের সামগ্রিক সম্পদ যা বেড়েছে তার পাঁচ ভাগের একভাগ বেড়েছে আদানি গোষ্ঠির। বর্তমানে এই গোষ্ঠী আম্বানিদের পেরিয়ে এশিয়ার সবথেকে ধনী গোষ্ঠী হয়েছে।
· কোভিড অতিমারির সময়ে বোঝা গেছে ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর। তবুও ২০১৯-২০ বাজেটের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ কমেছে।
· এই সময়ে শিক্ষার ক্ষেত্রেও বাজেট বরাদ্দ আগের থেকে ৬ শতাংশ কমেছে।
· সামাজিক নিরাপত্তা বরাদ্দের ক্ষেত্রে আগে খরচ হত মোট বাজেটের ১.৫ শতাংশ। কিন্তু ২০২১-এ তা কমে হয়েছে ০.৬ শতাংশ।
আর আমাদের শাসকেরা অমৃতকালের স্বপ্ন দেখাচ্ছে।
ফেব্রুয়ারি -২২, ২৭- ৪৫, অর্থনীতি, বৈষম্য
Comments
Post a Comment